হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভার বিলওয়াই, বলাখাল, অলিপুর ও শ্রী রামপুর গ্রাম, বাকিলা ইউনিয়নের বাকিলা, চতন্তর, শ্রীপুর গ্রামের কৃষকরা বোরে ধানের আগে এই সবজি চাষ করেন। এছাড়াও বিছিন্নভাবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কুমড়া ও লাউ, মুলা, লালশাক, টমেটো, ক্ষিরা, ফুলকপি, বাঁধাকপির আবাদ হচ্ছে।
হাজীগঞ্জে লাউ-কুমড়া চাষ। ছবি-মুহাম্মদ মাসুদ আলম
পশ্চিম বলাখাল গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, তিনি প্রায় ৩০/৩৫ বছর আগে থেকে বর্ষা মৌসুমে ভাসমান কচুরি পানা স্তূপ করে কুমড়া ও লাউ চাষ করে আসছেন। এখন বয়স বেশি হওয়ার কারণে তার তিন ছেলে এ চাষাবাদ দেখাশোনা করেন। এবছর তার ছেলেরা চার একর জমিতে লাউ ও কমুড়ার আবাদ করেছেন। পাশাপাশি ক্ষিরাইয়ের আবাদও রয়েছে। কুমড়া ও লাউ বিক্রি করে তাদের বাৎসরিক পারিবারিক খরচের অনেকাংশ মেটান।হাজীগঞ্জে কুমড়া চাষ। ছবি-মুহাম্মদ মাসুদ আলম
একই এলাকার কৃষক মো. মফিজ মিজি জানান, প্রায় ২০ বছর আগ থেকে কুমড়া ও লাউ আবাদ করছেন তিনি। আশ্বিন মাসে ভাসমান কচুরিপানার স্তূপে বীজ বপন করেন। পৌষ মাসের মাঝামাঝি এ আবাদ শেষ হয়। ছোট থেকে বড় সাইজের প্রতিটি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হয়। ফড়িয়াদের কাছে প্রতি ১শ’ কুমড়া বিক্রি হয় ৪ হাজার টাকা করে। স্থানীয় বাজারগুলোতেও তারা নিজেরা বিক্রি করেন। এতে তাদের লাভ হয় বেশি। বড় কুমড়াগুলো প্রতিটি ৫ থেকে ১০ কেজি ওজনের হয়। আর লাউ বিক্রি হয় ২০-৫০ টাকা দরে।হাজীগঞ্জে কুমড়া চাষ। ছবি-মুহাম্মদ মাসুদ আলম
বাকিলা এলাকার কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, তিনি এ বছর নিজের ও বর্গা নিয়ে ২ একর জমিতে শুধু কুমড়া চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তার কুমড়া অধিকাংশ বিক্রি করেছেন ফড়িয়াদের কাছে। ফড়িয়ারা এসব কুমড়া কৃষকদের কাছ থেকে কিনে হাজীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ট্রাকে করে চট্টগ্রামে পাঠান।হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মনি সূত্রধর বাংলানিউজকে বলেন, কুমড়া ও লাউ আগে কৃষকরা বাড়ির আশপাশে লাগালেও এখন ফসলি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। মূলত এসব কুমড়া ও লাউ চাষের জন্য কোনো সার ব্যবহার করা হয় না। বর্ষা মৌসুমে ভাসমান কচুরিপানা স্তূপ করে বীজ বপন করা হয়। এখন আমরা কৃষকদের কীভাবে খুব সহজেই কচুরিপানা স্তূপ করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এসব সবজি চাষ বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
এএ