ঢাকা, বুধবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৬ জুলাই ২০২৫, ২০ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

মধ্য অগ্রহায়ণেই কুয়াশার চাদর

জাহিদুর রহমান,স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:১৯, নভেম্বর ২৯, ২০১৪
মধ্য অগ্রহায়ণেই কুয়াশার চাদর ছবি: জাহিদুল ইসলাম/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মানিকগঞ্জ: মধ্য অগ্রহায়ণেই তীব্র কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়লো মানিকগঞ্জ। ঘন কুয়াশার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যান চলাচল।

কনকনে শীত জাঁকিয়ে বসায় জনজীবনেও নেমে এসেছে দুর্ভোগ। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষগুলোর সীমা নেই ভোগান্তির।

কোথাও কোথাও দেখা গেলো খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যান চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে বিঘ্নিত হয়েছে ফেরি  চলাচল।

ভোরে মানিকগঞ্জে সূর্যের দেখা মিলেছে সকাল সাড়ে আটটার পর। দিনমজুর বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের এদিন দেখা গেলো নির্ধারিত সময়ের বেশ পড়ে কাজের সন্ধানে বের হতে।

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বাসিন্দা নিয়ামত আলী বাংলানিউজকে জানান, কুয়াশার কারণে চোখের সামনে কিছু দেখা না যাওনে দেরি কইরা বাইর হইছি।

undefined


শহর ছাড়িয়ে কিছুটা গ্রামের দিকে গেলে দেখা যায় কুয়াশা যেনো আরো জাঁকিয়ে বসেছে। আচ্ছন্ন করে রেখেছে গোটা এলাকাকেই।

ভোরেই ট্রাক্টর নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন মানিকগঞ্জের বানিয়াজুড়ির শাহ আলম। সকাল ৯টায় তাকে দেখা গেলো হেড লাইট জ্বালিয়ে ট্রাক্টর চালাতে।

বাংলানিউজকে তিনি জানান, সূর্যের আলোর কারণে কুয়াশা কিছুটা কেটে যাবার পরই তিনি বের হয়েছেন।

ছালামত সরকার নামে একজন কৃষক বাংলানিউজকে জানান, এভাবে কুয়াশা পড়তে থাকলে ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কায়কোবাদ স্বপন নামের একজন কৃষিবিদ বাংলানিউজকে জানান, কুয়াশা ফসলের জন্যেও দুর্ভোগের কারণ বয়ে আনতে পারে।

তার মতে এতে করে ফসলে ছত্রাকজনিত রোগের প্রকোপ বাড়বে। কচি শিম, টমোটো ঝরে যাবে। সবজিতে দেখা দিতে পারে আরলিব্লাইট, লেটব্লাইট রোগ।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া নৌবন্দরে দেখা মিললো যানজটের।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) বিদ্যুত কুমার সাহা বাংলানিউজকে জানান, তীব্র কুয়াশার কারণে ফেরি সার্ভিস সোয়া ঘণ্টার জন্যে বন্ধ রাখায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

undefined


তিনি বলেন, শেষ রাত থেকেই কুয়াশার আবরণে ঢেকে যায় পদ্মা। যে কারণে বেশ সর্তকতার সাথে ফেরি চলাচল সচল রাখা হয়।

তবে ভোর সোয়া ৫টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়।
পাটুরিয়া অংশে লোড দিয়ে ৬টি ও বিপরীত দৌলতদিয়া লোড দিয়ে দুটি ফেরিকে প্রায় সোয়া ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়।

ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে কুয়াশা কিছুটা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
তবে মানিকগঞ্জে ঘন কুয়াশার দাপট থাকলেও পদ্মার অপর অংশ মাওয়া–কাওরাকান্দি রুটে খুব বেশি বিপাকে পড়তে হয়নি বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তাদের।

বিআইডব্লিউটিসির কাওরাকান্দি কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (মেরিন) এটিএম শাহজাহান বাংলানিউজকে জানান, কুয়াশা এখানেও আছে। তবে রাতের তুলনায় ভোরে তীব্রতা তেমন না থাকায় ফেরি চলাচল করছে সর্তকতার সাথে।

এদিকে তীব্র কুয়াশায় ঢাকা আরিচা মহাসড়কে যান চলাচলে নেমে আসে স্থবিরতা। ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় বেশ ধীর গতিতে চলতে দেখা যায় যানবাহনগুলোকে।

undefined


বরিশালগামী একটি দূর পাল্লার বাসের চালক মোবারক হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তীব্র কুয়াশার মধ্যেই  ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের।

তবে অনেককে তীব্র গতিতে ছুটতে দেখায় সড়ক নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

তার মতে আমি তো হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীরে ধীরে চলছি। অনেকে এ সময়টাতেই গতি বাড়িয়ে দেওয়ায় ঘটছে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা।

যশোর থেকে ছেড়ে আসা ট্রাকের চালক ময়েজ সরদার বাংলানিউজকে জানান, ফেরি ঘাটের বিলম্বকে পুষিয়ে নিতেই অনেকে দ্রুতগতিতে ছুটছেন যার কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘ্ণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।