ঢাকা, বুধবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৬ জুলাই ২০২৫, ২০ মহররম ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

এক শসাতেই সব সমাধান

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:১৪, মার্চ ২১, ২০১৫
এক শসাতেই সব সমাধান

ঢাকা: গরম তো এসেই গেল। আর এসময় শরীরে পানির চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

এই চাহিদা মেটাতে খাদ্য তালিকায় প্রচুর পানি, পানি জাতীয় ফল ও সবজি রাখা প্রয়োজন। পানি জাতীয় সবজির মধ্যে শসা অন্যতম। শসা ছাড়া সালাদ চলে নাকি! শুধু সালাদ কেন, যেকোনো খাবার ডেকোরেশন করতে টমেটো, গাজর আর লেবুর সঙ্গে শসাও ব্যবহার করা হয়।

শসা, লাউ, কুমড়া ও তরমুজ একই বংশদ্ভূত সবজি। তরমুজের মতো শসাতেও  রয়েছে ৯৫ শতাংশ পানি। তাই গরমে প্রচুর পরিমাণে শসা খাওয়া উচিৎ। কারণ এটি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির যোগান দেয়।

শসাতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন কে, ভিটামিন বি, কপার, পটাসিয়াম, ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজ। এসব উপাদান ছাড়াও এতে রয়েছে পলিফেনসসহ আরও অনেক উপাদান যা দূরারোগ্য ব্যাধি সারাতেও পারদর্শী। শসাকে খাদ্য তালিকায় রাখতে যেসব বিশেষ কারণ রয়েছে চলুন তা জেনে নিই।

সুরক্ষিত মস্তিষ্ক

undefined


শসায় রয়েছে ফাইজেটিন নামে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ফ্লেভানল যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ফলদায়ক। এটি উন্নত স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বয়সজনিত কারণে স্মৃতিভ্রংশের সম্ভাবনা কমিয়ে আনে ও স্নায়ুকোষকে সুরক্ষিত রাখে। ফাইজেটিন আলজেইমার্স রোগীদের শেখার ইন্দ্রিয়গুলোকে সুরক্ষা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের সৃজনশীল ক্রিয়ায় সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধক

undefined


শসা লিগন্যান্স  নামক  পিনোরিসাইনল, ল্যারিসাইরিসাইনল ও সিকুইসোলারসাইরিসাইনল পলিফেনলস সমৃদ্ধ। যা স্তন, জরায়ু, ওভারিয়ান ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও শসা কিউকারবিটাসিনস ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ। আর কিউকারবিটাসিনসে রয়েছে অ্যান্টি ক্যান্সার প্রপার্টিজ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

প্রদাহ দূর করে

undefined


শসার রস শরীরের প্রদাহজনিত এনজাইমের কার্যকলাপ দমন করে প্রশান্তি ফিরিয়ে আনে। ফলে যেকোনো অংশের জ্বালাপোড়া কমিয়ে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রপার্টিজ

undefined


ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ শসাতে আরও রয়েছে কুয়ার্সটিন, লিউটিওলিন ও ক্যামফেরল, যা একাধারে অ্যালার্জি প্রতিরোধক, হৃদরোগ প্রতিরোধক, রক্তচাপ কমায় ও স্ট্রেস দূর করে।

সজীব নিশ্বাস

undefined


শসা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে ফলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে না। এছাড়াও আয়ুর্বেদিক গবেষণা অনুযায়ী, শসা পাকস্থলিতে জমা অতিরিক্ত তাপ দূর করে। পাকস্থলিতে জমা তাপ নিঃশ্বাসে অস্বস্তি হওয়ার প্রাথমিক কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
 
স্ট্রেস কমায়

undefined


শসাতে রয়েছে ভিটামিন বি-১, বি-৫ ও ভিটামিন বি-৭ (বায়োটিন)। এসব বি ভিটামিনগুলো স্ট্রেস দূর করতে দারুণ ভূমিকা পালন করে।

হজমে সহায়তা

undefined


হজমের ক্ষেত্রে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানি ও ফাইবারসহ শসার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। খাওয়ার আগে খানিকটা খোসাসহ শসা খেলে হজমে কোনো অসুবিধা হবে না।

সঠিক ওজন

undefined


ফাইবার সমৃদ্ধ এককাপ শসা কুচিতে রয়েছে মাত্র ১৬ কিলোক্যালরি। শসা অন্ত্রে জেলের মতো এক ধরনের লেয়ার তৈরি করে ফলে সহজে খিদে পায় না। এ কারণেই উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার ওজন হ্রাসে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও উচ্চরক্তচাপ

undefined


শসার রস শরীরে ইনসুলিন নামে হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। এছাড়াও শসায় রয়েছে স্টেরল নামে এক ধরনের উপাদান যা রক্তে জমা ক্ষতিকারক চর্বি দূর করে। শসার পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও ব্যাপক ভ‍ূমিকা রাখে। শসা একই সঙ্গে উচ্চ ও নিম্নরক্তচাপ উভয়েরই ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

চুল ও ত্বকের যত্নে

undefined


শসা ত্বকের রোদে পোড়া দাগ, কালচে ভাব ও চোখের নিচে কালি দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এছাড়াও চোখের ফোলাভাব কমাতে শসা কুচি করে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে চোখের ওপর দিতে পারেন। দশ মিনিট রেখে জলের ঝাপটায় ধুয়ে ফেলুন। চুলে ঝরঝরে ভাব আনতে ও চুল দ্রুত বেড়ে ওঠায় শসার রসের জুড়ি নেই। কারণ, শসার রসে রয়েছে সালফার ও সিলিকন যা দ্রুত চুল বেড়ে উঠতে সহায়তা করে।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।