ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

এক ছাদের নিচে কিডনির সব চিকিৎসা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:১৯, জুলাই ১৭, ২০১৭
এক ছাদের নিচে কিডনির সব চিকিৎসা এক ছাদের নিচে কিডনির সব চিকিৎসা, ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: ডায়ালাইসিস ও পরবর্তীতে জরুরি সেবাগুলো এখন মিলছে একসঙ্গে, এক ছাদের নিচে। কিডনি রোগীদের হন্যে হয়ে আর বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরতে হবে না। ঢাকার অদূরে সাভারের এনাম মেডকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে সব ব্যবস্থা।

তুলনামূলক কম খরচে অত্যাধুনিক মেশিনে ডায়ালাইসিস সুবিধা দিচ্ছে এ হাসপাতালটি। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড কিডনি ডায়ালাইসিস স্পেশালিস্ট ডা. পূজা রক্ষিত বলছিলেন ডায়ালাইসিস সেন্টারের সব সুবিধার কথা।

ডা. পূজা রক্ষিত, ছবি: জিএম মুজিবুর

হাইপার টেনশন, ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস বা ছোট বয়স থেকে হাত-পা ফোলা, বমি ভাব হয়- কারও এ ধরনের সমস্যা থাকলে কিডনির অসুখ হতে পারে জানিয়ে ভারতের এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, তখন খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

আরও পড়ুন:
চিকিৎসক‍ রোগী খুঁজে নেন এনাম মেডিকেলে
ওয়ান স্টপ মেডিকেল সার্ভিস গড়তে চাই: এনামুর রহমান
সেবায় অনন্য সাভারের এনাম মেডিকেল
ক্যানসার মানেই মরে যাওয়া নয়: ডা. সোমনাথ দে
বাঁচার স্বপ্ন দেখাচ্ছে এনাম ক্যানসার সেন্টার


বমি বমি ভাব, দুর্বলতা, প্রস্রাব থেকে রক্ত আসা- এ লক্ষণগুলো দেখা দিলে গাফিলতি না করে দ্রুতই হাসপাতালে আসা উচিত। এতে আর্লি ডিটেকশন হবে, আর্লি ট্রিটমেন্টও হবে।

তিনি বলেন, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক ছাদের নিচে সমস্ত সুব্যবস্থা পেতে পারেন রোগী। ডায়ালাইসিস মেশিন থেকে শুরু করে হিমো ডায়ালাইসিস, সিএফইডি, সিআরআরটি- এ ধরনের সব সেবা দেওয়া হয় এখানে। সুতরাং, কিডনির কোনো সমস্যা হলে এখানে সব ধরনের চিকিৎসাই পেয়ে যাচ্ছেন।  

হাসপাতালে আসা কিডনি রোগীর অধিকাংশই ইনস্টেজ পর্যায়ে থাকে জানিয়ে ডা. পূজা বলেন, তাদের জন্য বিভিন্ন সাপোর্ট দরকার হয়। সেজন্য একটা জায়গায় না থাকলে কঠিন হয়ে পড়ে।

‘অ্যাভলেভল ইজ দ্য কি’- এ কথা স্মরণ করে দিয়ে ডা. পূজা বলেন, হাতের কাছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সব সুবিধা থাকলে আপনি সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না।

এক ছাদের নিচে কিডনির সব চিকিৎসা, ছবি: জিএম মুজিবুর

ডা. পূজা বলেন, কিডনির যে কোনো সমস্যা প্রথম পর্যায়েই শনাক্ত হচ্ছে, সেটা একটা সুবিধা। তবে ডায়ালাইসিস করার সময় কিছু সমস্যা হতে পারে, সেজন্য পাশেই হাসপাতাল থাকলে রোগী সেই সুবিধা পায়। জরুরি মুহূর্তে আলাদা হাসপাতালের যেতে হবে না।
এখানে আটটি মেশিন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আরও দু’টি আসছে। দুই শিফটে ডায়ালাইসিস করা হয়, জরুরি হলে রাতের বেলাও ডায়ালাইসিস করতে পারেন রোগী।

সুবিধার কথা বলতে গিয়ে বলেন, এখানে এক জায়গায় চিকিৎসক পাচ্ছেন, অত্যাধুনিক মেশিন পাচ্ছেন, হাসপাতালে আইসিইউ সেটআপ আছে। সুতরাং চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেক দিন প্রত্যেক রোগীর কাছে যাচ্ছি, ওয়ান টু ওয়ান ইন্টারঅ্যাকশন করছি।
কিডনি রোগীর কম্পলায়েন্সটাই সবচেয়ে বেশি দরকার জানিয়ে পূজা বলেন, কিডনি রোগ হলে কী করবো কী করবো না- এটাই জানা জরুরি।

যারা দ্রুত ‍আসেন বা রিকভারেবল ডিজিজ যেমন- অ্যাকিউট বা অল্প দিনের জন্য কিডনির সমস্যা, সাপে কাপড় দিয়েছে বা কোনো ওষুধ খেয়েছে সেগুলোর জন্য কিডনি রোগ হয়। আর্লি স্টেজের রোগীদের ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেগুলোর ক্ষেত্রে সফলতা ৮০-১০০ শতাংশ বলে জানান ডা. পূজা।

আর ইন স্টেইজ বা ক্রনিক কেসগুলোর ক্ষেত্রে রিকভারির জায়গা না থাকলেও মেইনটেনেন্স করতে হয় ডায়ালাইসিস দিয়ে।
কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিসের খরচ খুব বেশিও না জানিয়ে ডা. পূজা বলেন, আশপাশের যে সেন্টারগুলো আছে সেগুলোর তুলনায় কম।

এক ছাদের নিচে কিডনির সব চিকিৎসা, ছবি: জিএম মুজিবুর
প্রায় এক বছর ধরে হাসপাতালের কাজ করছেন ভারতের এই চিকিৎসক, তার স্বামী ডা. সোমনাথ ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হিসেবে একই হাসপাতালে কাজ করছেন।

এমবিবিএস ছাড়াও বিএলএসএস অ্যান্ড এসিএলএস ডিগ্রিধারী ডা. পূজা রক্ষিত ভারতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার নেফ্রোলজিতে সাত বছর প্রাকটিস করেছেন। কলকাতার প্রখ্যাত ফোরটিস হসপিটাল অ্যান্ড কিডনি ইনস্টিটিউটসহ কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করেছেন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে ২০১৬ সালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের উপর ফেলোশিপ পান তিনি।

ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ডা. পূজা ভেন্টিলেশন অ্যান্ড আইসিইউ কেয়ার, হেমোডায়ালাইসিস, সিএপিডি, সিআরআরটি, ইনন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজ এবং ডায়াবেটিসসহ হাইপার টেনশনের উপর সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।