ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৫ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর ভূপাল থেকে সরানো হল বিষাক্ত বর্জ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪০, জানুয়ারি ২, ২০২৫
গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর ভূপাল থেকে সরানো হল বিষাক্ত বর্জ্য

ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভূপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার সেই দুর্ঘটনা আজও রক্ত শীতল করে দেয় অনেকের। সেই বিভীষিকাময় রাতের প্রায় ৪০ বছর পর অবশেষে সরানো হলো বিষাক্ত বর্জ্য।

 

বুধবার রাতে একাধিক ট্রাকে করে খুব সাবধানে সেই বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হয় ইন্দোরের কাছে অবস্থিত পিথমপুরে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।  

জানা যায়, মোট ৩৩৭ টন বর্জ্য পদার্থ ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে সরানো হয় বুধবার। গ্রিন করিডর করে অতি সাবধানে এ বর্জ্য পরিবহন করা হয়। ভূপাল থেকে পিথমপুরের দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানে গিয়ে পৌঁছায় বর্জ্য বহনকারী ট্রাকগুলো।  

গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সরানোর জন্যে তোড়জোড় শুরু হয়। কারখানা চত্বর পরিষ্কার শেষে বুধবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে ১২টি ট্রাকে করে ৩৭৭ টন বর্জ্য পদার্থ ভোপাল থেকে সরানো হয়।

মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এর আগেও একাধিকবার ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সেই কাজ হয়নি। পরে গত ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত মামলায় আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে।  

এ বর্জ্য সরানোর জন্যে চার সপ্তাহের সময় বেঁধে দেন উচ্চ আদালত। এই পরিস্থিতিতে বিশেষ কন্টেইনার নিয়ে একের পর এক ট্রাক গত রোববার থেকেই ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানায় পৌঁছে যায়। সেসব ট্রাকে করেই বর্জ্য পদার্থ পৌঁছে গেল পিথমপুরে।

পিথমপুরে সেই বর্জ্য পদার্থ পোড়ানো হবে। এ নিয়ে আবার ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে পিথমপুরবাসীদের মধ্যে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এ বর্জ্য পদার্থ পোড়ানোর জেরে পিথমপুরে কোনো দূষণ হবে না। তবে বর্জ্য পোড়ানো হলে সেখান থেকে ছাইয়ের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা চালানো হবে। বর্জ্য পুড়িয়ে যে ছাই হবে, তা দ্বিস্তরীয় আবরণে মুড়ে মাটিচাপা দেওয়া হবে।

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে ভূপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক করার জেরে মৃত্যু হয়েছিল তিন হাজার ৭৮৭ জনের। তবে এই পরিসংখ্যানটা সরকারি।  

বেসরকারিভাবে দাবি করা হয়, ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। আর এ দুর্ঘটনায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের শারীরিক ক্ষতি হয়েছিল।  এরপর থেকে বিগত ৪০ বছর বন্ধ ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা। চার দশক পর সেই কারখানা থেকে দুর্ঘটনার স্মৃতি হিসেবে থাকা বর্জ্য সরানো হলো।

বাংলাদেশ সময়:  ১৭৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২৪
আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।