ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৭ সফর ১৪৪৭

আইন ও আদালত

পুলিশের ছেলে হত্যা মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তা রিমান্ডে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৩৫, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
পুলিশের ছেলে হত্যা মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তা রিমান্ডে

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার মিছিলে নির্বিচার গুলিবর্ষণে পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইমকে হত্যা মামলায় অপর তিন পুলিশ কর্মকর্তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমদ, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান ও উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন।  

এর আগে মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। সেই আবেদনের শুনানির জন্য আজ সকালে তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এ সময় আসামি তানজিল আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্দোলনের দুই মাস আগে আমার যাত্রাবাড়ীতে পোস্টিং হয়। আমি ট্রাফিক পুলিশের এসি ছিলাম। একজন ট্রাফিক পুলিশের কাজ কী সবার জানা। আমি এ ঘটনার কিছুই জানি না। এরপর আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

জানা যায়, গত বছর ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তাইম যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের উপ-পরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। ছেলে হত্যার ঘটনায় গত বছরের ২০ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদের আদালতে ওই শিক্ষার্থীর মা মোসা. পারভীন আক্তার এ মামলা করেন।

মামলায় ওয়ারী বিভাগের তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, ওয়ারী বিভাগের এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদ, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন ও এসআই শাহাদাৎ আলীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার গত ২০ জুলাই কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যান। তখন ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা ওই এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালান।

প্রাণভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতাড়ি ছুটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সাটার টেনে দেন। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিল। সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলির থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলেন। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির এ সময় গুলি করে। এরপর তাকে চিকিৎসার সুযোগও দেয়নি তারা। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
কেআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।