ঢাকা, বুধবার, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৩ জুলাই ২০২৫, ২৭ মহররম ১৪৪৭

মুক্তমত

বাংলানিউজে স্বপ্ন পূরণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬:২৫, জুলাই ১, ২০১৭
বাংলানিউজে স্বপ্ন পূরণ খুলনা ব্যুরো অফিস

খুলনা: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, গায়ক, নায়ক, শিক্ষক ইত্যাদি কোনোকিছু হওয়ার স্বপ্ন ছিলো না আমার। রাজনীতি করে সিংহাসনে বসারও ইচ্ছা ছিলো না। স্বপ্ন ছিলো কবি কিংবা লেখক হওয়ার।

লেখাপড়া চলাকালে কিছু কবিতাও লিখেছি। কিন্তু তাতে তো আর পেটে ভাত জোটে না।

যে কারণে প্রায় এক যুগ আগে সাংবাদিকতা শুরু করি খুলনার একটি স্থানীয় দৈনিকে।  

পরবর্তীতে জাতীয় একটি পত্রিকায় কাজ শুরু করি। জায়গার স্বল্পতায় একদিন নিউজ ছাপা হতো আবার দুই দিন হতো না। এডিট করে ২০ লাইনের লেখা দুই লাইনে। যা দেখে হতাশ হতাম। এরপর ২০১২ সালের প্রথম দিকে বাংলানিউজের সঙ্গে শুরু হয় পথচলা। কাগজের পত্রিকা থেকে অনলাইন পত্রিকায় আসাকে অনেকে বাঁকা চোখে দেখেছেন। করেছেন বিদ্রুপ। তবে কেউ কেউ যে অনুপ্রেরণা দেননি তাও নয়।  

মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম আমার। বাবা শিক্ষক ছিলেন। মধ্যবিত্তের স্বপ্ন দেখতে নেই। খুব কম স্বপ্নই পূরণ হয় মধ্যবিত্তের। কিন্তু এই সহজ সত্যটা মানতে কখনও রাজি ছিলাম না আমি। বাংলানিউজে জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর পাহাড়সম স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু করি। কাজ করার তিন সপ্তাহের মাথায় অফিস থেকে ফোন আসে আপনার ‘খুলনা সদর থানা: অ্যাকশন, ওসি স্টাইল’ শিরোনামের নিউজটির জন্য পাঁচ হাজার টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে। আমি এতে আরও ভালো কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত হই। স্বপ্নের সিড়িতে হাঁটা শুরু করি।  

কিছুদিন যেতে না যেতে বিএনপি’র ডাকা হরতালের আগের রাতে ঢাকায় ঈগল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মারা যাওয়া খুলনার ফুলতলার বাসচালক বদর আলী নিহতের পর তার পরিবারের অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে, পরিবারটিকে দুই লাখ টাকা দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ। একে একে নিউজ ও প্রতিবেদন করে জেলা প্রতিনিধি থেকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এরপর সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট হয়েছি। সেইসঙ্গে খুলনার ব্যুরো এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।  

৮ম প্রতিষ্ঠাকার্ষিকীতে বাংলানিউজের কর্মীরা

৮ম প্রতিষ্ঠাকার্ষিকীতে বাংলানিউজের কর্মীরা

এছাড়া ২০১৬ সালে বাংলানিউজের ‘বছর জুড়ে দেশ ঘুরে‘ টিমের সদস্য ও বর্ষসেরা রিপোর্টার। খুলনায় অফিস হয়েছে। বাংলানিউজের বদৌলতে দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরতে পেরেছি। দেশের বাইরেও পা ফেলার সুযোগ হয়েছে। সম্ভব হয়েছে খুলনা প্রেস ক্লাবের সদস্য হওয়া। বাংলানিউজে কাজ করে অর্জনের তালিকা দীর্ঘ। সর্বোপরি ভালো জীবন যাপন করছি।  

বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনে হয়েছে অনেক রদ বদল। এভাবে গত ছয় বছরে অনেকের কপাল খুলেছে, অনেকের পুড়েছে। অদম্য হতদরিদ্র মেধাবী সুমির বাড়ি ছুটে গেছেন জেলা প্রশাসক। সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। দিয়েছিলেন বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।  

বাংলানিউজে কাজ করা মানে প্রতিনিয়ত যোগ্যতার পরীক্ষা দেওয়া। ২৪ ঘণ্টাই প্রস্তুত থাকতে হয় এ পরীক্ষা দিতে। এতো বছর কাজ করে নিজের স্বপ্ন পূরণে যে মানুষটি পথ প্রদর্শক তিনি বাংলানিউজের শ্রদ্ধেয় এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন। তিনি এডিটর পরিচয় ছাপিয়ে পরিণত হয়েছেন আমার অভিভাবকে। আমার প্রতিটি সুসময়-দুঃসময়ে তাকে পাশে পাই।  

বাংলানিউজের কেন্দ্রীয় অফিস

বাংলানিউজের কেন্দ্রীয় অফিস

‘মাঠ সাংবাদিকতা’ বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলানিউজের ভূমিকা অন্যতম। অনলাইন পত্রিকার ঢাকার বাইরে মফস্বলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যুরো ও অঞ্চলিক অফিস স্থাপন করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শ্রদ্ধেয় এডিটর ইন চিফ। যে কারণে প্রযুক্তিপ্রিয় মেধাবী সংবাদকর্মীরা কর্মজীবন বেছে নিয়েছেন বাংলানিউজে। অজপাড়াগাঁয়ের খবর প্রধান নিউজ হতে পারে তা প্রমাণ করেছে বাংলানিউজ। শুধু দ্রুত সংবাদ পাঠানো, খবরের গভীর অনুসন্ধান, অতি সহজ-সরল উপস্থাপন, পাঠকের বোধগম্য শব্দ আর বাক্য গঠনে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেছেন বাংলানিউজের কর্মীরা।  

বাংলানিউজের এক ঝাঁক সহকর্মীর নিরন্তন সহযোগিতা না পেলে আমি আজ এ অবস্থায় আসতে পারতাম না। মাঠ সাংবাদিকতা পেশার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হয়েছে। কোথাও আটকে গেলে সহকর্মীরা প্রেরণা জুগিয়েছেন।  

বাংলানিউজের ৭ম জন্মবার্ষিকীতে সবাইকে খুলনা ব্যুরো অফিসের পক্ষ থেকে নিরন্তন শুভেচ্ছা।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৭
এমআরএম/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।