ঢাকা, শুক্রবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৫ জুলাই ২০২৫, ২৯ মহররম ১৪৪৭

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

এটাও সম্ভব!

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২৫, ডিসেম্বর ১২, ২০১৪
এটাও সম্ভব! ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিদ্যুতের মেলা, সেটা আবার কেমন! কৌতুহল থেকেই মেলায় এসেছিলেন। এসে যা শুনলেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।

এইটা কি আদৌ সম্ভব! বিশ্বাস করতে না পারলেও বাস্তবে তাই ঘটেছে হাজী আবুল হাসেমের ক্ষেত্রে।

বাংলানিউজকে হাজী আবুল হাসেম জানান, মেলা মানেইতো হরেক রকমের পণ্য বেচা-কেনা। কিন্তু বিদ্যুতের মেলার কথা শুনে চমকে গেছিলাম। তাই দেখতে এসেছিলাম, এখানে কি হয়।

তিনি বলেন, মেলায় প্রবেশ করে একটি স্টল পার হয়ে পা বাড়াতেই চোখে পড়ে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) স্টল। কাছে গিয়ে জানতে চেয়েছিলাম, আপনাদের এখানে কি পাওয়া যায়? একজন বললেন, এখানে আবেদন করলে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।

আমি বিশ্বাস করতে চাইনি। পরে বললেন, আপনার বিশ্বাস না হলে প্রমাণ করে দেখতে পারেন। আমি নিজেই অনেক দিন ধরে সংযোগের জন্য ঘুরছিলাম।

ছুটে গেলাম বাসায়। গিয়ে নিয়ে এলাম রাজউকের অনুমোদনের কাগজ, ছবি, ভোটার আইডি কার্ড ও ট্যাক্সের কাগজ। এনে আবেদন করলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যে ডিমান্ড নোট তৈরি করে দিলেন। পাশেই সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের শাখায় টাকা জমা দিলাম। আর পেয়ে গেলাম নতুন সংযোগের কাগজ। আজকে (শুক্রবার) রাতেই সংযোগ দেওয়ার কথা।

undefined


আবুল হাসেম ২৮/১ হাজারীবাগ রোডের বাসিন্দা। শুরুর গল্পটা ভিন্ন হলেও আবুল হাসেমের মতো মাতুয়াইলের মোহাম্মদ আলী দিপু, বনশ্রীর বাসিন্দা আলতাফ হোসেন, নারিন্দার জাহানারা বেগম, স্বামীবাগের জলিল গাজী, মালিবাগের কামাল হোসেনসহ মেলায় দু’ দিনে ১৮৫ জনকে নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

মেলার স্টলে বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমোদন দিচ্ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখানে এ সার্ভিস দিয়ে গ্রাহক ও ডিপিডিসি’র কর্মকর্তাদের মাঝে একটি বার্তা দিতে চাই। তা হচ্ছে সেবার মান এ রকম হতে হবে। গ্রাহকরা যেন হয়রানির শিকার না হন।

মেলায় ১০ মিনিটে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হলে অন্যান্য সময় ১০ দিনেও কেন সম্ভব হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিপিডিসি’র এই কর্মকর্তা বলেন, অফিসে লোকজন নানা রকম কাজে ব্যস্ত থাকেন। সে কারণে অনেক সময় সম্ভব হয় না। আর এখানে একটি কাজ নিয়ে সকলেই প্রস্তুত।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, আমরা এ রকম সেবার দিকেই অগ্রসর হচ্ছি। কিন্তু আমাদের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে। অপেক্ষায় থাকা সব সংযোগ একবারে দিতে গেলে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তাই একসঙ্গে সংযোগ না দিয়ে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স করা হচ্ছে।

মেলায় ডিপিডিসি’র স্টল সার্বক্ষণিক সেবা দিতে উপস্থিত রয়েছে প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ডেপুটি ম্যানেজার আইসিটি কামরুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, মেলায় বিদ্যুৎ বিল নেওয়া হচ্ছে। আর বিদ্যুৎ বিল দিলে একটি করে সিএফএল বাল্ব উপহার দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া আবাসিকে লোড বৃদ্ধি, বকেয়া বিলের কিস্তি আদায় ও গ্রাহকদের যেকোনো ধরনের অভিযোগের তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হচ্ছে। ডিপিডিসি ছাড়াও অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো মেলায় অংশ নিয়েছে। কিন্তু ডিপিডিসি’র মতো ওয়ান স্টেপ সার্ভিস রাখেনি বিতরণ কোম্পানিগুলো।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলানিউজকে বলেন, সেবার মান বাড়াতেই এই ওয়ান স্টেপ সার্ভিস স্থাপন করা হয়েছে। এখানে থেকে সকলকে  বার্তা দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে সকল বিতরণ সংস্থাকে এ সেবার আওতায় আনা হবে।

undefined


শুধু মেলা নয়। অফিস থেকেও এ রকম সেবার কিভাবে দেওয়া যা সে বিষয়ে ভাবছে সরকার বলেও জানান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে এই বিদ্যুৎ মেলা। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় দেশি-বিদেশি ৯৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এখানে এসে সেবা গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।