ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পথে পথে 'ডিম্ব পাথর'

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০৮, অক্টোবর ২০, ২০১৬
পথে পথে 'ডিম্ব পাথর' ছবি: অাবু বকর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

থানচি, বান্দরবান থেকে: থানচি ব্রিজের কাছেই সুদৃশ্য শত শত পাথর দিয়ে সাজানো গিরিপথ। নাম না জানা এক ঝরনা থেকে গোলাকৃতি পাথরের ফাকে ফাকে স্বচ্ছ পানির স্রোত ধারা প্রবাহমান।

সেই স্বচ্ছ পানিতে খেলা করছে ছোট মাছ। দিয়েছে অাকর্ষণীয় রূপ।

উপজেলা সদরের সন্নিকটে এই পর্যটন কেন্দ্রটি হলেও দৃষ্টি কাড়তে পারছেনা পযটকদের। জানার কমতি এবং পথ দুর্গম হওয়ায় অাড়ালে থেকে যাচ্ছে ছন্দাক ঝিরি ঝরনার পরের এই স্পট।

সাঙ্গু নদী ধরে থানচি উপজেলার অতি পরিচিত কুমারী ঝরনা ও নাফাখুং ঝরনা পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বিকেলে গাইড প্রকাশ মল্লিক জানালেন কাছেই দুটি সুন্দর স্পট- ছান্দাক ঝিরি ঝরনা ও ডিম পাথর। সুন্দর হলেও কিন্তু কেউ যেতে চায় না।

তার কথা শুনে অামাদের অাগ্রহ গেল বেড়ে। বুধবার শেষ বিকেলে তড়িঘড়ি করে অামাদের যাত্রা শুরু ওই দুই স্পট।

থানচি বাজারের কাছে ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে গিরিপথ ধরে এগোতে একেবারে শেষ প্রান্তে ছান্দাক ঝিরি ঝরনা। পাহাড়ের গা ধরে, কখনও ঝিরি পথে (গিরিপথ) হেটে শেষমেশ দেখা মিললো এই ঝরনাটির, যা দৃষ্টি কাড়বে সহজেই।

এই ঝরনা থেকে ফিরে বাজারের দিকে কিছুটা এগিয়ে অারেকটি গিরিপথ। সেগুন ঝিরির ওপর নির্মিত সেগুন সেতুর গোড়ায় একেবারে খাড়া পাহাড়ি পথ।

এদিক ওদিক তাকিয়ে গাইড প্রকাশ মল্লিক বললেন, এদিক দিয়েই নামতে হবে। অামরাও তার পিচু নিলাম সাবধানে পা সামনে এগোলো।

একশ' ফুটের বেশি গভীরতায় গিরিপথ দরে হাটা শুরু। দুপাশে ময়না মাটি, পানির স্বচ্ছ স্রোতের মাটিতে দেখা যাচ্ছে পানির নিচের ছোট ছোট পাথর। কিন্তু পুরো পথ অার পানিতে এগোনো গেল না। পিচ্ছল পাথর, অাবার কেথাও কেমর পানি- এজন্য বাধ্য হয়ে উঠতে হয় ওপরে। খানিটা যেতে অাবারও নামতে হয় পানিতেই।

এভাবে প্রায় ২০ মিনিটের পথ, সামনে দেখা গেল বড় বড় গোলাকৃতির কয়েকটি পাথর। এটাই সেই স্পট কিনা- জানতে চাইলে প্রকাশ জানালো অারও সামনে।

পাথরের ফাকে ফাকে প্রবাহিত স্বচ্ছ পানির স্রেতধারা পেরিয়ে এবার সেই স্পট। সামনে পাথরের সারি, একটা পাথরের সাথে লেগে অাছে অার একটি পাথর, ছোট বড় মাঝারী- সবই ডিমের মত, গোলাকৃতি। দেখে মনে হবে পরম যত্নে সাজিয়ে রেখেছে কেউ।

কিন্তু অার এগেনো গেল না, কারণ সামনে কোমর পানির বেশি গভীরতা। সামনে যতদূর চোখ যায় কেবলই পাথরের সারি।

গাইড প্রকাশ জানালো, অারও অাধা ঘণ্টা গেলে একটি ঝরনা, পুরো পথেই বিছানো গোলাকার পাথর। এই ঝরনা থেকে অাসছে পানি। বছরব্যাপী পানি থাকায় সেই ঝরনা থেকে থানচি বাজারে পানি সরবরাহ করা হয়।

থানচির বড় বড় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পানি বৃিদ্ধ পেলে এগুলোই কাছাকাছি। তবে যাওয়ার পথ সহজ না হওয়ায় ডেখানে পৌছানো পর্যপ্টকের জন্য কষ্টদায়ক।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাওয়ার পথ সহজ করে দিলে এসব স্পটে বছরব্যাপী মিলবে পর্যটক।

আরও পড়ুন-

** সাঙ্গুর বাঁকে 'ডিম’ পাহাড়ে, বিকেলেই সূর্য ডুবে!
** দুর্গম পাহাড়ের আড়ালে অপূর্ব দু’টি ঝরনা
** লেকের ধারে পাহাড়পাড়া, মেঘের কোলে স্বর্গীয় লীলাভূমি!
** ঝরনায় ফেলছে বোতল-প্লাস্টিক, দেখার নেই কেউ?
** টাকার গাছ!
** পাহাড়ি ঝরনায় পর্যটকের সঙ্গী যখন মুলি বাঁশ
** পাহাড়িদের প্রিয় খাবার নাপ্পি’র সাতকাহন
** সাদা রঙের হলুদ আর আদা ফুল অনন্য, পর্যটকের কাছেও আকর্ষণীয়
**  ভরা মৌসুমে পর্যটক টানছে পাহাড় ঘেরা খাগড়াছড়ি
** পাহাড়ে উদ্ভাবিত ফলের জাত ছড়াচ্ছে সারাদেশে
** ওয়ান স্টপ সার্ভিসের প্রস্তুতি নিচ্ছে বান্দরবান পুলিশ

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
এমঅাইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ